আজ শনিবার, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দখলবাজ আইভী’ না শামীম ওসমান!

সংবাদচর্চা রিপোর্ট

নাসিক মেয়র আইভী ও সাংসদ শামীম ওসমানের মধ্যে দখলবাজে বাগযুদ্ধ সৃষ্টি হয়েছে নতুন করে। তবে কে কোন ভাবে দখলবাজ তা পরিস্কার হতে চলছে দ্রুত সময়ের মধ্যে। চলছে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ। এছাড়া ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটামও দিচ্ছেন। সমসাময়িক বক্তব্যকে নিয়ে নতুন করে শুরু হচ্ছে নারায়ণগঞ্জে উত্তেজনা। সৃষ্টি হচ্ছে আবার আতংক। এর আগে ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, অস্ত্র প্রদর্শনি ও গুলির ঘটনা ঘটে।

সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে ক্ষমা না চাইলে আন্দোলন গড়ে তুলবেন বলেও ঘোষণা দেন ঘাতক দালল নির্মূল কমিটি জেলার সভাপতি চন্দন শীল। ১৬ জুন রোববার সকালে চাষাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বোমা হামলায় নিহতদের পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এই আল্টিমেটাম দেন।

এর আগে মেয়র আইভী আলীগঞ্জ মাঠে ১৫ জুন প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন,সাংসদ শামীম ওসমানের ৪ একর জমি দখল করেছেন। নারায়ণগঞ্জের ওসমানী স্টেডিয়াম দখল করে আপনার বাবার নাম দিয়েছেন কেন, কি কারনে। সাবেক পৌরসভার ৯ একর জমি দিয়েছেলো এই ওসমানী স্টেডিয়ামের জন্য। সেখান থেকে আপনি ৪ একর জমি দখল করে নিয়েছেন। সেই দখল করা জমিতে আপনি আপনার বাবার নাম দিয়েছেন। কেন দখল করেছেন? দখলের করার স্বভাবটা আপনি বন্ধ করুন।’

অপরদিকে, মেয়রের এই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পরই শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠজন এবং মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম পাল্টা মেয়র আইভীসহ তার পিতা, পরিবার এবং ঘনিষ্ঠজনদেরকে দখলবাজ বলে মন্তব্য করেন। শনিবার (১৫ জুন) রাতে শাহ নিজাম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি মেয়র আইভী সম্পর্কে ওইসব অভিযোগ তুলেন। শাহ নিজাম তার সেই পোস্টে লিখেছেন, “মেয়র আইভি আপনি থামেন। আজকে একটি অনলাইন মিডিয়ায় দেখলাম মেয়র আইভি, আমাদের নারায়নগঞ্জ এর গর্ব, নারায়নগঞ্জের মানুষের প্রানের স্পন্দন শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন দখল বাজি ছাড়েন। আমার প্রশ্ন, দখলবাজি কে করে? শামীম ওসমান নাকি আপনি ও আপনার পরিবার?”
শাহ নিজাম তার পোস্টে আরও দাবি করেন, “আপনি (আইভী) আপনার বিশ্বস্ত লোক দিয়ে সিটি কর্পোরেশন এর সকল টেন্ডার নিজের দখলে রেখেছেন। আপনার পিতা জিওস পুকুর, বর্তমান আপনার বাড়িসহ বহু হিন্দু সম্পত্তি দখল করেছেন। কাউকে খুশি করতে একজন সন্মানিত সাংসদকে নিয়ে কটুক্তি করা শোভনীয় না।”

চন্দন শীল আরো বলেন, ভয়াবহ বোমা হামলায় নির্মমভাবে ২০ মানুষ শহীদ হয়েছে ২০০১ সালের ১৬ জুন । নিহত সেই শহীদদের নাম সম্বলিত একটি স্মৃতি স্তম্ভ রয়েছে এখানে। অথচ এই স্মৃতি স্তম্ভের পাশে একটি ডাস্টবিন করে রেখেছে সিটি করপোরেশন। কতটা জঘন্য হলে এমন কাজ করতে পারে। তাই আমি আইভীকে সরাসরি বলতে চাই, আমি তাকে ২৪ ঘন্টা সময় দিলাম। এই সময়ের মধ্যে তাকে নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে প্রকাশ্যে এবং সংবাদ পত্রের মাধ্যমে ক্ষমা চাইতে হবে এবং একই সময়ের মধ্যে ডাস্টবিন অপসারন করতে হবে। যদি না চান তাহলে নারায়ণগঞ্জবাসীকে সাথে নিয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আওয়ামীলীগের এই নেতা আরো বলেন, ১৬ জুনের বোমা হামলার নারায়ণগঞ্জের একটি মহল এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ঘটনার পর থেকেই নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে আসছে। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি বিএনপি-জামাত জোট ও দেশের স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এই বোমা হামলায় জড়িত।

তিনি বলেন, মুফতি হান্নান, মোরসালিন ও মোত্তাকিন বারবার স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছে তারা এ ঘটনায় জড়িত। কিন্তু আমি মনে করি তারা শুধু শ্রমিকের দায়িত্ব পালন করেছে। নিশ্চয় এর পরিকল্পনাকারী অন্য কেউ। মোরসালিন ও মোত্তাকিন গ্রেফতার হয়ে ভারতীয় পুলিশ হেফাজতে আছে। তাই সরকারের কাছে দাবি করবো, ভারত থেকে ওদের দেশে ফিরিয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে মূল পরিকল্পনাকারীকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

১৫ জুন মেয়র আইভি বলেছিলেন, টাকা খাওয়ার যে নরপিশাচ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশে সেই নরপিশাচরাই পারে একটি খেলার মাঠকে গ্রাস করার মত জঘন্য কাজ করতে। নিশ্চই তারা মানুষ নামধারী নরপশু। এই আলীগঞ্জ খেলার মাঠের সবুজের বুক চিড়ে তারা এখানে ৯ তলা বা ১৫ তলা ভবন নির্মান করতে পারেনা। প্রধানমন্ত্রীকে ভুল ম্যাসেজ দেয়া হয়েছে। সুতরাং নেত্রীকে সত্যটা জানানো আমাদের দায়িত্ব। যেকোন মূল্যে এই মাঠকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।

তবে আইভী শামীম পাল্টাপাল্টি অবস্থানে তাদের থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসছে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ